Home » » বিকৃত করে দেওয়া হয়েছিল লাশগুলো by শরিফুল হাসান @নারায়ণগঞ্জ

বিকৃত করে দেওয়া হয়েছিল লাশগুলো by শরিফুল হাসান @নারায়ণগঞ্জ

Written By setara on Thursday, May 1, 2014 | 2:36 AM

নারায়ণগঞ্জের বন্দর থানার শীতলক্ষ্যা নদী থেকে আজ বৃহস্পতিবার আরও একটি লাশ উদ্ধার করা হয়। লাশটি কার? সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে তিনটি পরিবারের সদস্যদের হিমশিম খেতে হয়েছে। লাশগুলো এতটাই বিকৃত হয়ে গিয়েছিল যে চেনা যাচ্ছিল না। তবে শেষ পর্যন্ত এই লাশটি লিটনের বলে শনাক্ত করা হয়।

নারায়ণগঞ্জ থেকে গত রোববার একসঙ্গে সাত ব্যক্তি অপহূত হন। তাঁরা হলেন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম, তাঁর বন্ধু মনিরুজ্জামান স্বপন, তাজুল ইসলাম, লিটন, নজরুলের গাড়িচালক জাহাঙ্গীর আলম, আইনজীবী চন্দনকুমার সরকার ও তাঁর ব্যক্তিগত গাড়ির চালক ইব্রাহিম।

এর মধ্যে বুধবার দুপুরে শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ছয়জনের লাশ উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার হওয়া প্রতিটি মরদেহের সঙ্গে বেঁধে দেওয়া হয়েছিল বড় বড় কংক্রিটের খণ্ড, যাতে করে মরদেহগুলো নদীতে ডুবে থাকে। মরদেহগুলো হাসপাতালে নিয়ে আসার পর সেখানে স্বজনদের আর্তনাদে ভারী হয়ে ওঠে পরিবেশ। লাশগুলো বিকৃত হয়ে গিয়েছিল। উদ্ধার শেষে মরদেহগুলো নিয়ে আসা হয় নারায়ণগঞ্জের জেনারেল হাসপাতালে। খবর পেয়ে সেখানে ছুটে যান নারায়ণগঞ্জ থেকে অপহূত ব্যক্তিদের স্বজনেরা।

প্যানেল মেয়র এবং ওয়ার্ড কাউন্সিলর নজরুল ইসলামের লাশ শনাক্ত করেন তাঁর ভাই আবদুস সালাম। পরে নজরুলের সঙ্গে অপহূত মনিরুজ্জামান স্বপনের লাশ শনাক্ত করেন তাঁর ভাই রিপন। চন্দন কুমার, মনিরুজ্জামান ও ইব্রাহিমের লাশ শনাক্ত করেন পরিবারের সদস্যরা। হাসপাতালে থাকা অপর লাশটি নজরুলের বন্ধু লিটনের বলে ধারণা করা হলেও লিটনের পরিবার সেটি নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে।

এর মধ্যে বৃহস্পতিবার সকালে আরেকটি লাশ উদ্ধার হলে লিটন ও জাহাঙ্গীরের দুই পরিবারই নারায়ণগঞ্জের জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। লাশগুলো এতটাই বিকৃত হয়ে গিয়েছিল যে কোনোভাবেই চেনা যাচ্ছিল না। এ পর্যায়ে লিটনের বড় ভাই মুকুল লাশটির গঠন দেখে তাঁর ভাই লিটনের বলে শনাক্ত করেন। তখন ধারণা করা হয় পড়ে থাকা লাশটি বোধ হয় জাহাঙ্গীরের। কিন্তু জাহাঙ্গীরের পরিবার জানায়, লাশটি তাদের নয়। তাদের ধারণা, তাজুলের পরিবার যে লাশটি নিয়ে গেছে, সেটিই বোধ হয় জাহাঙ্গীরের। এরপর পুলিশ তাজুলের পরিবারকে খবর দিলে সিদ্ধিরগঞ্জ থেকে তারা লাশটি হাসপাতালে আসে। এরপর সেটি জাহাঙ্গীরের লাশ বলে শনাক্ত করা হয়। এরপর এই দুটি লাশ দুই পরিবারকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়।

পুলিশ ও নিহতের পরিবারের সদস্যরা জানান, লাশগুলোর সারা শরীরে কোপানো হয়েছে। মুখমণ্ডল গলে বিকৃত হয়ে গেছে। কোনোভাবেই আসলে লাশগুলো চেনা যাচ্ছিল না। তবে পরিবারের সদস্যরা শরীরের গঠন, পোশাক দেখে লাশগুলো শনাক্ত করেছেন। নারায়ণগঞ্জ থানার ওসি মনজুর কাদের জানিয়েছেন, লাশ নিয়ে বিভ্রান্তি কেটেছে। লিটন, জাহাঙ্গীর ও তাজুলের পরিবার এখন যার যার লাশ বুঝে পেয়েছে। তিনি বলেন, অ্যাসিড দিয়ে লাশগুলো বিকৃত করা হয়েছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে। তাই চেনার উপায় ছিল না।

0 comments:

Post a Comment